পুরানো আইফোন কেনার আগে জানা উচিৎ….
আমরা প্রায় সময়ই আমাদের শখ মিটিয়ে নিতে বা প্রয়োজনের কারনে পুরানো ফোন কিনে থাকি,যদিও এর অনেক কারন থাকে। এর মধ্যে প্রধান কারন আমাদের আর্থিক বাজেট। কারন অনেক সময়ই আমরা চাইলে বেশি দামের ফোন গুলো কিনতে পারি না কারন আমাদের তেমন সামর্থ্য থাকে না বলা চলে।
কিন্তু পুরানো ফোন গুলি তে নানা রকমের সমস্যা থাকে আর সেটা যদি হয় আইফোন তাহলে তো কথাই নেই।আপনি আপনার জমাকৃত টাকা দিয়ে আইফোন কিনলেন আর সেই আইফোন যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে দুঃখের শেষ নেই। তাই আইফোন কেনার পূর্বে অবশ্যই বিশেষ সতর্কতা নিয়ে কিনতে হবে।
অনেক যাচাই বাছাই এর পর পুরানো আইফোন কেনা উচিত,তাই আজকে আমি জানাবো পুরাতন আইফোন কেনার আগে কি কি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ আমাদের সেই বিষয় সম্পর্কে।
তো বন্ধুরা আপনাকে আবারো স্বাগতম আপনার নিজের ব্লগে,আশা করি সবাই ভালোই আছেন, আজকের নিবন্ধিত ব্লগটি দেখে হয়ত অনেকেই বুঝে গেছেন আইফোন কেনার পূর্বে যে সব বিষয় আমাদের জানা উচিৎ সেই বিষয়ে লিখতে যাচ্ছি।
আবার অনেকেই আছেন যারা পুরানো আইফোন কিনবেন বলে ভাবছেন তাদের জন্য আজকের এই ব্লগ টি অনেক সাহায্য করবে।
আজকের এই পোষ্ট টি থেকে আমরা মোটামোটি ভাবে পুরানো আইফোন কেনার পূর্বে বুঝে নিতে পারবো এটাই যে কি ধরনের বিষয় গুলি আমাদের ফলো করা উচিত,এবং এই পোষ্টটি আমি আপনাদের নিজ অভিজ্ঞতা থেকে ভাগ করে নিতে যাচ্ছি।
পুরানো আইফোন কেনার আগেঃ
পুরাতন ফোন কেনার আগেই বেশির ভাগ মানুষ সব বিষয় গুলি না বুঝেই কিনে ফেলেন লকড আইফোন মোবাইল,আর তার মধ্যেই থাকে নানা ধরনের সমস্যা গুলি,আর তখনই আমাদের মাথা ব্যথার কারন হয়ে যায় আমাদের প্রিয় ফোনটি।
তো সে যাই হোক এই নিয়ে আর চিন্তা করার কোন কারন নেই ,কারন এই ব্লগ থেকে জানা কয়েক টি বিষয় আপনি লক্ষ্য করলেই নিজেই বুঝে যাবেন যে পুরান আইফোন কিনতে হবে কিভাবে আর সমস্যা থেকেও মুক্তি পাবেন আশা করি।
তাই আমার দেয়া কিছু পথ আপনাকে খুব ভালো করেই দেখতে হবে।
তাই যত্নসহকারে আমার আজকের ব্লগটি ধৈর্য্য নিয়ে পরে নিন।
পুরাতন আইফোনে যা যা খেয়াল করা উচিতঃ
১। প্রথমেই আপনাকে পুরাতন আইফোন কেনার পূর্বে খেয়াল করা উচিৎ এর টাচ আইডি কাজ করছে কিনা,তাই ফোন কেনার পূর্বে অবশ্যই টাচ আইডি ভালো ভাবে যাচাই বাছাই করে দেখবেন।
যদিও বর্তমানে আপডেট ফোন আইফোন ৮ এর পর আইফোন ১০, আইফোন ১১ তে টাচ আইডির জায়গা তে ফেস আইডি ব্যবহার করা হচ্ছে।
২। এর পর যার থেকে আপনি পুরানো আইফোন টিকে ক্রয় করবেন তাকে বলবেন সে যেন পুরো আইফোন টিকে রিসেট করে দেয়,এর পর মোবাইল টিপে দেখবেন এ সময় যদি কোন আইডি বা পাসওয়ার্ড চায় তাহলে সেটি কে পুরোপুরি অই ব্যক্তির সামনে বসেই রিসেট করে নিবেন। আর তা না হলে পর্ববর্তীতে আপনি যেকোন সমস্যায় পড়তে পারেন বা সমস্যা হতে পারে।
৩। এবার আপনাকে পুরানো আইফোনের ডিস্প্লে ,ক্যামেরা এবং ফ্ল্যাশ লাইট খুব ভালো করে খুটিয়ে দেখবেন এবং যখন আপনি ফোন চেক করা শুরু করবেন তখন ফোনের ব্যাটারীর দিকে খেয়াল রাখবেন এর ব্যাটারী চার্জ কত টুকু আছে তাই এবং মোবাইল চেক করা শেষ এর চার্জ কত টুকু আছে সেটা খুব ভালো ভাবে খেয়াল রাখুন।
আর এই ভাবে আপনি যদি পুরানো আইফোন কেনার আগে ভালো করে খেয়াল করতে পারেন তাহলেই আইফোনের ব্যাটারী ব্যাকাপ কেমন ! সেটা কেমন সাপোর্ট দিবে ভালো নাকি খারাপ এ বিষয়ে আপনার একটা ধারনা আসবে।
এবং এর পর আইফোনের সেটিং এ ঢুকবেন এর পর ব্যাটারী অপশন সিলেক্ট করে একটা অপশন দেখবেন (Battery Health) এখানে ঢুকে দেখে নিবেন আইফোন এর ব্যাটারী হেলথ কত আছে।
এখানে একটি বিষয় জেনে রাখুন ব্যাটারী হেলথ ১০০ বা ৯৯ থাকে প্রথম অবস্থায় ,তাই যখন পুরানো আইফোন কিনবেন অবশ্যই লক্ষ্য করবেন যে ফোনের ব্যাটারী হেলথ কত টুকু আছে যদি ফোন ৮ থেকে ১২ মাস ব্যবহৃত হয় তাহলে এর ব্যাটারী পার্সেন্টিজ ৯০ থেকে ৮০ এর মধ্যে থাকে যদি এক বছর ছয় মাস ব্যবহার করা হয় তাহলে এটি প্রায় ৮০-৭০ এর মধ্যে থাকবে,১ বছর ব্যবহার করা আইফোনে কোন দিনই ১০০ ভাগ পূর্ন ব্যাটারী হেলথ থাকবে না।
আমরা অনেকেই এই ভুল টি করি যে আমরা মনে করি আইফোনের কন্ডিশন এতো দিন ব্যবহারেও এটি খুব ভালো আছে প্রকৃতপক্ষে এটির ব্যাটারী পাল্টানো হয়েছে,তাই এ বিষয়ে ভুল করলে চলবে না। কারন ১ বছরে মিনিমান হলেও ১০% ব্যাটারী ব্যাকাপ কমে যাবে এবং বিষয় আমাদের দেশের পুরানো মোবাইল কেনা বেচার শপিংমল গুলো থেকে কেনার সময়েও লক্ষ্য রাখা উচিৎ।
৪। পুরানো আইফোন কেনার বিষয়ে আপনাকে এটাও খেয়াল রাখতে হবে যে আপনি যে বক্স সহ আইফোন টি ক্রয় করেন এবং যে মোবাইল টি কিনবেন সেই মোবাইলের IMEI নম্বর টি যেনো উক্তবক্সের IMEI এর সাথে মিল থাকে।
যদি আইফোনের বক্স এর সাথে IMEI এর মিল না থাকে তাহলে এ ধরনের ফোন কেনা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন বা এ ধরনের ফোন গুলি না কেনাই আপনার জন্য ভালো হবে।
কারন বক্স ছাড়া আইফোন কেনার পর বলা যায় না আপনাকে পুলিশের হয়রানীর স্বীকার হতে পারেন ,
তাই বিষয় টি আপনাকে মাথায় রাখতে এবং আরেকটি বিষয় বলে রাখি আপনি যখন ফোনের ডিটেইলসে যাবেন তখন খেয়াল করবেন যে আপনার হাতের পুরাতন ফোনের মডেল নং যেনো M থেকে শুরু হয় তাহলে বুঝে নিবেন ফোন টি অরিজিনাল এবং যদি N থেকে শুরু হয় তাহলে ফোনটি রিপ্লেসমেন্ট করা হয়েছে।
এখান থেকেই বুঝা যাবে আপনার হাতের ফোনটির কন্ডিটিশন কেমন পর্যায়ে আছে।
নিচে কিছু ডিটেইলস বলে দিচ্ছি, একটু ভালো ভাবে খেয়াল করে জেনে নিন।
Details About Iphone Model:
এখান থেকে আপনি M ও N এই মডেল নম্বরের আইফোন নিতে পারেন এতে কোন সমস্যা নাই…তাই এ দুইটি দেখলে সে ফোন নিতে পারেন কারন আইফোন কে এমন ভাবে কাষ্টমাইজ করা হয় যে এটি খুলে কিছু চেঞ্জ করলে এ অপশন পাল্টে যায়।
৫। পুরাতন আইফোন কেনার পূর্বে ফোনের স্ক্রু গুলো একটু ভালো ভাবে লক্ষ্য করুন,এগুলার মধ্যে কোন দাগ আছে কিনা।
যদি কোন দাগ দেখা দেয় তাহলে মোটামোটি ভাবে এটা বুঝে নিতে হবে আপনার হাতের পুরানো ফোন টা হয়ত খোলা হয়েছিলো।
আর এ ধরনের ফোন গুলিতে থাকা টাচ আইডি যেকোন সময় নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে।তাই এ ধরনের ফোন কেনার আগে ভালো ভাবে খুচিয়ে দেখবেন।
৬। এটা যদিও তেমন মেজর পয়েন্ট না তবে খুলে বলি পুরানো আইফোনে নানা রকমের সমস্যা থাকতে পারে তাই যখন কোন ফোন কিনবেন তাতে একটি সীম লাগিয়ে কল করে দেখবেন যে এটায় কোন সমস্যা আছে কিনা এবং সাউন্ড ক্লিয়ার কিনা।
এর কারন শুধু মাত্র আইফোনেই মাদারবোর্ড আলাদা আলাদা করে সব লাগানো।
যেমন স্পীকারের সাথে ফন্ট ক্যামেরা এক সাথে একটি আলাদা সূক্ষ্ম মাদারবোর্ডের সাথে এড করা।
আবার ব্যাক ক্যামেরার সাথে এড করা চার্জিং পোর্ট এবং মাউথ স্পীকার।
আশা করি এই বিষয় টা ক্লিয়ার হয়েছেন…
তাছাড়া ডিরেক্ট সীমে চলছে নাকি গ্রাভি সীম ব্যাববার করতে হবে এ বিষয় টি নিশ্চিত হয়ে নিবেন।
৭। তাছাড়া ফোন টি যেখান থেকে কিনবেন সেখানে বসেই চার্জ দিয়ে দেখতে পারেন ,যদিও হাল্কা আর্থিন বা ঝিন ঝিন করে স্পর্শকাতর জায়গা গুলি তে তাহলে বুঝে নিবেন এটা অরিজিনাল চার্জার না যদিও এ বিষয় টি তেমন ম্যাজর না।
কারন আমাদের দেশে অরিজিনাল ফোন আসলেও অনেকে ফুল সেট আনতে পারে না বলেই ভালো মানের চার্জার দিয়েও এটিকে চার্জ করতে পারেন।
তবে একবারে বিগিনার হয়ে থাকলে এভোয়েড করতে পারেন।
৮। ফোন কেনার পূর্বে ফোনের IMEI ভালো করে চেক করে নিবেন। কারন অনেক সময় পুরানো আইফোন ব্লাকলিষ্টেড করা থাকে তাই এ ধরনের ফোন কিনবেন না।
আপনার IMEI থেকে খুব সহজেই অই ফোন কত দিন আগে পার্চেস করা হয়ে এটি জেনে নিতে পারবেন এ জন্য আপনি গুগলে IPhone IMEI check লিখে সার্চ করলে পেয়ে যাবেন।
৯। নকল আইফোন বোঝার ক্ষেত্রে আরেক টি বিষয় নকল আইফোন এ প্লে ষ্টোর থাকে এবং কোন আই ক্লাউড থাকে না
এবং আমরা বিভিন্ন গ্রুপ বা পেজে বিজ্ঞাপন দেখি ৪০০০ টাকা কিংবা ৫ হাজারে আইফোন বিক্রি করছে আইফোন ১০ বা আইফোন ১১ ,আইফোন ম্যাক্স প্রো ,আইফোন ১১ প্রো, এসব ফোন কেনা থেকেও বিরত থাকুন।।
১০। এবং পুরাতন আইফোন কেনার সময় অবশ্যই সেলার এর থেকে প্রমান হিসাবে তার ন্যাশনাল আইডি কার্ড এর একটি ফটোকপি নিয়ে রাখবেন ব্যাক্তিগত দলিল হিসাবে।
এ কাজ টি একবারেই ভুলবেন না…
আশা করি পুরাতন আইফোন কেনার আগে আপনি উপর রুল গুলো ফলো করবেন এতে করে আপনার কোন সমস্যা হবে না কারন আইফোন এর সব ধরনের বিষয় বস্তু নিজ আইডিয়া এবং আমি যেভাবে ফোন কিনে ছিলান ঠিক সে থেকেই তুলে ধরেছি আপনার সামনে।
আর সব থেকে বড় বিষয় আপনি আইফোন চেক করার সময় কোন লজ্জ্বা করা চলবে না।
কারন আপনি নিজের জমানো টাকা দিয়ে শখের ফোন কিনতে চাচ্ছেন,তো যখন চাচ্ছেন অবশ্যই ভালোটাই নিবেন আশা করি।
আর যদি এগুলো না করে ধরা খেয়ে যান তাহলে সেটির জন্য আপনার লস তাই বিক্রেতার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলেন।
তো বন্ধুরা আজকের ব্লগ টি বিষয়ে যেকোন মন্তব্য জানাতে ভুলবেন না।
এবং আজকের নিবন্ধিত ব্লগ টি আপনাদের ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন,এতে আপনার পাশাপাশি আপনার বন্ধুরাও বেশ উপকৃত হবে।
আপনি চাইলে আমার বাংলা ব্লগ ঘুরে আসতে পারেন এখান থেকেঃ
টিপস২হাব